অনেক দিন আগে পোস্ট করছিলাম। ভেবেছিলাম মরে যাব, পারিনি বাবা মা সবার কথা ভেবে...
যাইহোক গল্পটা তাহলে বলি, চোখভরা স্বপ্ন নিয়ে দেশের সেরা বিদ্যাপিঠে ভর্তি হলাম। নিজের পছন্দ মত বিষয় না পেয়ে একটু হতাশায় ছিলাম। তাছাড়া গ্রাম থেকে আসাতে সবার সাথে এডজাস্ট করতে টাইম লাগছে। তখনি অন্য ডিপার্টমেন্ট এর একটা ছেলের সাথে ফেসবুকে পরিচয়। ক্যাম্পাস দেখা হয় কথা হয়, ভালো বন্ধু হই৷। সে সব চেয়ে ভালো মানুষ আমার দেখা মতে। সে আমাকে ভালোবাসতো কিন্তু বাংলাদেশের এই মাথা আর সেই মাথায় বাড়ি হওয়ায় আমি রাজি হতে চাইনি।বাবা মা রাজি হবে না বলে।
আমরা অনেক দুষ্টামি করতাম মজা করতাম। সে আমাকে ব্ল্যাকমেইল শুরু করল।সে সুইসাইড করবে। আমাকে প্রতিদিন ঘুমের ট্যাবলেট এর ছবি দিত।আমি অনেক বোঝাতাম এটা তার আবেগ কিন্তু সে বলতো এটা তার বিবেক।তারপর নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে এক সময় রাজি হয়ে গেলাম।শুধু বলেছিলাম আমি মানুষটাকে কষ্ট দিও না বাঁচতে পারব না। সে বলল সে আমাকে কষ্ট দিবে না। ১লা মে ২০১৬ থেকে সেই শুরু।
ক্যাম্পাসের ভালো জুটি হলাম। যাদের মাঝে কোন সমস্যা নাই।অনেক হ্যাপি ছিলাম। আমাকে অনেক ভালোবাসতো তাই কখনো তার ফোন চেক করার প্রয়োজন মনে করিনি। তারপর ২০১৮ সালে পড়াশুনার চাপ পড়লো। আমি টিউশন নিয়ে বিজি ছিলাম কিন্তু সে টিউশন না করায় হলেই থাকতো।আমি পড়তে বলতাম। দেখা হত প্রতিদিন।তার কথা বলতে ইচ্ছে হত কিন্তু আমার সময় কম হত। সেই থেকে শুরু।
তারপর সে তার গ্রামের ক্লাস সেভেন পড়ুয়া একটা মেয়ের সাথে কথা বলা ও মেসেজিং শুরু করলো।আর আমি তো ভাবলাম পৃথিবী বদলাবে কিন্তু সে বদলাবে না। আমি বুঝতে পারিনি সে এত সুন্দর করে ওই মেয়ের সাথে কথা চ্যাটিং শুরু করবে। তারসাথে প্রতিদিন দেখা করতাম ভালোসময় কাটাতাম।কিন্তু তখনো যদি ফোন দেখতাম তাহলে বুঝতাম মনের দুরুত্ব কত করে দিয়েছে সে। এই বছর জানুয়ারিতে সে অসুস্থ হয়। তার মাথা পেইন হাবিজাবি। আমি ভাবলাম অনেকদিন তার কোথাও যাওয়া হয়না হয়তো তাই তার একটু রিলাক্স দরকার।ও তার বাবা মা গ্রামে থাকে না।
তাকে গ্রামে পাঠালাম একরকম জোর করে।আমি তো জানতাম না সে গ্রামের কারো সাথে কথা বলে জানলে হয়তো পাঠাতাম না। গ্রামে যাওয়ার পর তারা অনেক আপ্যায়ন করল তাকে। (ও বলে রাখি অই মেয়েটা আবার তার কাজিন হয় দূরসম্পর্কের) যেহেতু সে কথা মেয়েটার সাথে তাই মেয়েটার বাবা মা তখন তার সাথে কাজি ডেকে বিয়ে দিতে চাইছে নাকি (এইগুলা আমার পরে শুনা কথা) তখন সে না বলে ক্যাম্পাসে ব্যাক করছে।
তখন ও বুঝতে পারিনি সে আমাকে ইগ্নোর করছে আমি ভাবলাম সে পড়াশুনায় ব্যস্ত।একদিন সে আর আমি রিকশায়। তার ফোন আমার হাতে কি জন্য যেন দিয়েছিল।তখনি মেয়েটা মেসেজ করছে।তাকে জিজ্ঞেস করায় সে আমাকে মিথ্যা বলেছে।তাকে আমি অন্ধের মত বিশ্বাস করি বিধায় পাত্তা দেইনি ব্যাপারটায়।কিন্তু নাম্বার টা মাথায় ঢুকিয়ে নিয়েছিলাম। তার বাবা মার সাথে আমার কথা হত। উনারা আমাকে অনেক ভালোবাসে।
এরপর টুকটাক গোয়েন্দাগিরি করে যা পেলাম তাতে আমার বেঁচে থাকার ইচ্ছে জাগেনি। সে পরে সব স্বীকার করছে এটা একাকিত্ব থেকে হয়ে গেছে।আর হবে না। আর ঐ মেয়েটা জানতো একটা গার্লফ্রেন্ড ছিল কিন্তু এখন নাই।আমার মাথা ছুঁয়ে কসম করলো যোগাযোগ করবে না। ও তার ফোনে ব্ল্যাক লিস্ট না থাকায় আমার সদ্য কেনা শখের ফোনটা দিয়ে তার ফোন টা আমি নিলাম।
কিন্তু হায় আমি বিশ্বাস করতে শুরু করলাম আবার তারপর একটু খটকা নিয়ে ছিলাম। কিন্তু এত কিছুর পরও অনেক ইগ্নোর করছে৷অযথা ঝগড়া করে কান্না করিয়েছে। অনেক বকাঝকা করত। সে এই লাস্ট ৩-৪ মাস কান্নার কাছে টানা ছুড়ে ফেলার মধ্যেই রাখছে।ইভেন সে আমার সতিত্ব নিয়ে প্রশ্ন করছিল।আমি বললাম তার হাত ধরে ভালোবাসায় আসা সে যখন কিছু করেনি তাহলে অসতী কেন হব? তারপর ও কোরান ছুয়ে কসম করার কথা বললাম আমি।
সেইটা নিয়ে সে আর বাড়াবাড়ি করেনি।কারন সে আমাকে ভালোভাবেই চিনত।তাকে আমি শান্ত সভ্য হিসেবে জানতাম। লাস্ট কয়েকমাস তার রুপ দেখে আমি নিজেই অবাক হই।অনেক কথা শুনেছি তার কাছ থেকে যা আমাকে ক্ষত বিক্ষত করে দিচ্ছে এখনো। আমি মানতে পারিনা আগের মানুষ আর এখন মানুষটার সাথে।আমি কল দিলে বিরক্ত হয় মেসেজ দিলে হয়।
যাইহোক ১৭ তারিখ ক্যাম্পাসে একটা ইফতার ছিল।দুজনে গেলাম। ইফতার শেষে সে আমাকে ফোন দিল আর বলল একটু রাখো আমি আসতেছি।সে কখনোই তার ফোনের ডাটা অন করতে দিতে চাইতো না।আমি সুযোগ পেয়ে ভাবলাম দেখি। কল লিস্ট মেসেজ লিস্ট মেসেঞ্জার সব পরিষ্কার।নিষ্পাপ মনে হল। পরক্ষণেই মাইজিপি এপস চোখে পড়ে। অন করে দেখি সেই গ্রামের মেয়েটার সাথে এত কথা আর মেসেজিং।এত মেসেজের মাঝে দুই একটা আমাকে দয়া করে সেন্ড করত।
যেখানে মেয়েটার সাথে কথা বলত ৪২ মিনিট সেখানে আমার কল ৪২ সেকেন্ড। তাকে সেদিন আমার শপিং করে দেওয়ার কথা ছিল। সে আসার পর বললাম ৫০০০টাকা দিয়ে যা ইচ্ছে কিনিও আমি আর কথা বলব না তোমার সাথে। সে বলল অযথা তাকে সন্দেহ করছি। আমি তাকে এপস দেখালাম।সে এইবার চুপ।দুইঘন্টা আমার হাত ধরে রাখছে যেতে দেয়নি।বলল একটা সুযোগ দিতে।দিলাম সুযোগ।২০তারিখ ভালো ছিল।
তারপর আবার ইগ্নোর শুরু করছে। আজো কল দেওয়াতে বিরক্ত হচ্ছে।ওহ এখন আবার ব্রিলিয়ান্ট এপ্স ডাউন দিয়েছে।আমার আর বিশ্বাস হয়না।
শুধু মনে হয় এত ভালোবাসা আর এটাও নয় অই মেয়ে টা সুন্দর।অই মেয়েটা আমার হাজার ভাগের এক ভাগ ও হবে কিনা সন্দেহ। তারপরও এত বেহায়ার মত তার কথা শুনি।
শুধু মনে হয় এত ভালোবাসা আর এটাও নয় অই মেয়ে টা সুন্দর।অই মেয়েটা আমার হাজার ভাগের এক ভাগ ও হবে কিনা সন্দেহ। তারপরও এত বেহায়ার মত তার কথা শুনি।
আমি ওই মেয়েটাকে ফোন দিয়ে বললাম তাও সে আমাকে বলল দেখে নিবে।কারন তার কাছে সাপোর্ট আছে আমার কাছে নেই। আমি কি ক্লাস সেভেনের মেয়েটার কাছে হেরে যাব?? ইচ্ছে করে খুন করে আসি।
আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি। কান্না করছি প্রতিদিন।ক্যাম্পাস বন্ধ থাকা সত্ত্বেও ক্যাম্পাসে আছি এখনো তাকে রান্না করে খাওয়াতে।যদিও আজ ৩ -৪দিন খাওয়াইনি।আমি কি করব জানিনা।আসলে আমার কি করা উচিৎ। অনেক ছেলেরা বলে না মেয়েরা বিসিএস ক্যাডার পাইলে ভালোবাসা ভুলে যায়...কিন্তু আমার পরপর দুই জন এডমিন ও পুলিশ ক্যাডারের সাথে বিয়ের কথা চললেও করিনি। কারন বেহায়া মন টা যে তাকে অনেক ভালোবাসে।
আমি জানিনা কি করা উচিৎ। আমি অনেক একা হয়ে গেছি।বন্ধুদের ত্যাগ করেছি তার জন্য অনেক আগেই।আমাকে আজ ফ্যামিলি ও সাপোর্ট করবে না।অনেক ভালোবাসি।আমি চাই সে আমাকে ভালোবাসুক আগের মত।
ইচ্ছে আছে আজ দেখা করব।আমার কিছু টাকা আছে নিব।আমার ল্যাপটপ নিব।আর বলব এক নৌকা নিয়ে জীবন পাড়ি দিতে।সব বন্ধ করে দিব।আমি না হয় একা থেকেই যাব মৃত্যু পর্যন্ত। ছোটখাট জব আর অসহায় মানুষের পাশে থাকব।সে এইগ্রুপে আছে।আমি জানি আমার পোস্ট তুমি পড়বে।
Social Plugin